প্রায় ৩৫বছর,সেই ১৯৭৭ থেকে চাকুরীসূত্রে ঘুরে বেড়িয়েছি বিভিন্ন স্থানে!বাংলাদেশের আনাচে কানাচেও গেছি পোস্টিং নিয়ে!আজকালকার ডাক্তার ছেলে মেয়েদের মতো গ্রামে পোস্টিং নিয়ে ঢাকায় বসে চাকরী করার মানসিকতা ছিলো না!কর্মস্থলে থেকেই চাকরী করেছি।ছেলেমেয়েরাও গ্রামে পড়াশোনা করেই মানুষ হয়েছে!যদিও আমরা জন্ম থেকেই শহরে মানুষ!আমার তো বরং খুবই ভালো লাগতো খোলামেলা দূষণমুক্ত পরিবেশে,মুক্ত আলো হাওয়ায় বাস করতে।ছেলেমেয়েরাও প্রকৃতির কোলে ছুটে,হেসে খেলেই বেড়ে উঠেছে!রেসিডেন্সিয়াল এরিয়ার ভেতরে সরকারী বাসভবনে,সামনে ফুলবাগান,পেছনে সব্জীবাগান আর চারপাশে আম,জাম,কাঁঠাল,নারকেল গাছের ছায়ামায়ায় বিশাল জায়গা নিয়ে থাকার মাঝে আলাদা একটা আনন্দ ছিলো!সরকারী বাড়ি ,নিজের বাড়ির মতোই,কারোর খবরদারি নেই।ভেতরেই বাচ্চাদের খেলার মাঠ।বিকেল হতেই বাচ্চাদের হৈ হুল্লোড়ে সাথে বয়সীরাও মেতে উঠতো!সন্ধ্যা বা রাতে সবুজ ঘাসের ওপর পাটি পেতে লোড শেডিংয়ের সময় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে চাক্ষুস দেখা ভূতের গল্পও কম বিনোদনের ছিলো না!জামগাছের নিচের সেই বৈঠকি আড্ডার কথা এক জীবনে কখনোই ভুলতে পারবো না!জেলাতে সিভিল সার্জনের বিশাল বাংলো,রাজকীয় আরাম আয়েশ,এমনকি খেতখামার চিন্তাও করা যায় না এই রাজধানী শহরে!ডি.সি.,জেলা জজ,এস.পি.,সিভিল সার্জন আর প্রধান প্রকৌশলী ,এই ৫ব্যক্তি কোর অফিসার!ব্রিটিশ আমলের সেই রাজকীয় চাল এখনো বিবদ্যমান এই পঞ্চপান্ডবের পরিবার পরিজনের জন্যও!অবশেষে ঢাকায় এলাম।ঢাকা আমাকে আকর্ষণ করেনি কখনো!শ্বশুরবাড়িতেই এসে উঠলাম ।অসুবিধার কোন কারণ নেই,বিশাল বাড়ি!তারপরও শ্বাশুড়ি,দেবর ভাশুর অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,এতো বড় চাকরী করলে তোমরা,নিজেদের বাড়িঘর করতে হবে না?এতোদিনে টনক নড়লো আমাদের!
জীবনের শেষপ্রান্তে এসে ২৮ফেব্রুযারি,আমার ৫৯তম জন্মদিনে উঠবো নিজের ঠিকানায়!আমার স্বামী,এক কন্যা,এক পুত্রকে নিয়ে উঠে এলাম নিজের বাড়িতে!আমার স্বামী বলেন,‘যাযাবর জীবন সাঙ্গ হলো,এই শেষ যাত্রা,আর মালামাল টেনে নিয়ে ঘুরতে হবে না,এখান থেকেই চলে যাবো চিরকালের না ফেরার দেশে!
শুনে মনটা বিষাদে ছেয়ে গেলো!মনে হচ্ছে ইচ্ছে করে যেন নিজেরাই এগিয়ে যাচ্ছি মৃত্যুর পানে!নিজের বাড়ি,সুন্দর সাজানো গোছানো,বিলাস বহুল,স্বাধীন ঠিকানা!সবার মন আনন্দে ভরে উঠেছে!কিন্তু আমার মন খারাপ ভাবটা যাচ্ছে না!আমি এমন কেন?আমি কি বোহেমিয়ান জীবনই পছন্দ করি?নয়তো স্থিতি আমার ভালো লাগছে না কেন?নাকি শেষ যাত্রা কথাটাই আমাকে ভীত করে তুলেছে?!জবাবটা আমি নিজেও জানি না!
২৩ এপ্রিল - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৪৮ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪